মুক্তাগাছার ইতিহাস যেমন প্রাচীন তেমনি ঐতিহ্য সমৃদ্ধ।মূলত জমিদারদের হাত দিয়েই বিকশিত হয় মুক্তাগাছা।তৎকালীনসুবে বাংলার ২২ পরগনার একটি পরগনে আলেপশাহীর জমিদারী ১৭২৭ সালে বগুড়ারশ্রীকৃষ্ণ আচার্য্য চৌধুরী নবাব আলীবর্দ্দী খানের কাছ থেকে লাভ করে জমিদারীসদর দপ্তর বিনোদবাড়ীতে স্থাপন করেন।নতুন রাজাকে (জমিদার) সম্মান জানাতে স্থানীয় মুক্তারাম কর্মকার পিতল নির্মিত এক দীপাধার (গাছা) উপঢৌকন প্রদান করেন।খুশি হয়ে জমিদার বিনোদবাড়ীর নামকরন করেন মুক্তাগাছা।এভাবেই যাত্রা শুর্ব।পরবর্তীতে জমিদারদের প্রষ্ঠপোষকতায় মুক্তাগাছায় শিক্ষা, সংষিকৃতি, শিল্পকলা চর্চার পীঠস্থান হিসাবে গড়ে উঠে।প্রতিষ্ঠিতহয় পূর্ব বাংলার একমাত্র ঘূর্ণায়মান নাট্য মঞ্চ, ভূপেন্দ্র রঙ্গপীঠ, স্থাপিত হয় বাংলার অন্যতম বৃহত্তম পাঠাগার, জীতেন্দ্র কিশোর লাইব্রেরী, রামকিশোর উচ্চ বিদ্যালয়, নগেন্দ্র নারায়ন বালিকা বিদ্যালয়।জমিদারদের উদ্যোগেই কলকাতা থেকে ২২শে মে ১৮৭৮ তারিখে বেঙ্গল গভর্ণমেন্টের সহকারী সচিব বাবু রাজেন্দ্র নাথ মিত্র কর্তৃক ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখা পত্রে জানায় পত্রটি অংশাবিশেষ এই রূপ
“I AM directed to acknowledge the receipt of your endorsement No. 327L, dated the 1st instant, with its annexure, and in reply to inform you that the Lieutenant-Governor sanctions the conversion of the union of Mooktagacha, in the district of Mymensingh, into a second class Municipality from the 1st July 1878.’’
এর পর পরই বেঙ্গল গভর্ণমেন্টের অফিস সেক্রেটারী মি. ডি বারবার কর্তৃক একটি ঐতিহাসিক গেজেট নোটিফিকেশন জারী করেন যার অংশবিশেষ ছিল
‘‘ the 21st May 1878.- It is hereby notified for general Information that the Lieutenant-Governor has been pleased, in the exercise of the powers conferred on him by Section 8 of the Bengal Municipal Act, 1876, to extend to the Union of Mooktagacha, in the district of Mymensingh, the provisions of Chapters I, II, and V of the Act, with effect from the 1st July 1878, and to declare that for the purposes of this Act, it shall be deemed to be a Second Class Municipality from the aforesaid date.’’
ই ঐতিহাসিক গেজেট নোটিফিকেশন যার বলে জন্ম আজকের মুক্তাগাছা পৌরসভা।ইংরেজ রাজ কর্মচারী (জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট) জনাব মিঃজি. ষ্টিভেনশন প্রথম প্রশাসক হিসাবে ১৮৭৮ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করেন এবং ঐনোটিফিকেশন দ্বারা ০৭ জনকে কমিশনার হিসাবে মনোনিত করেন।এদের মধ্যে একজন জেলা যুগ্ম ম্যাজিষ্ট্রেট স্বল্পকালীন, পদাধিকারবলে এবং অন্যরা হলেন (১) বাবু সূর্যকান্ত আচার্য্য চৌধুরী রাজ বাহাদুর, জমিদার (২) বাবু অমৃত নারায়ন আচার্য্য চৌধুরী ,জমিদার (৩) বাবু যোগেন্দ্র নারায়ন আচার্য্য চৌধুরী , জমিদার (৪) বাবু কেশব চন্দ্র আচার্য্য চৌধুরী ,জমিদার (৫) বাবু দূর্গাদাস আচার্য্য চৌধুরী ,জমিদার (৬) বাবু কেদার কিশোর আচার্য্য চৌধুরী ,জমিদার। ঐতিহ্যবাহী এই পৌরসভার আয়তন ছিল ৪.৪ বর্গ কিলোমিটার।স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-২শাখার ১৫ জুলাই ১৯৯০ তারিখের এস.আর.ও নং ২৭০-আইন/৯০শা-পৌর-২/২সি-১৮-৮৭ The Pourashava Ordinance, 1977(XXVI of 1977) এরsection 4(b)প্রজ্ঞাপনদ্বারা এর সীমানা সমপ্রসারিত করায় বর্তমানে মুক্তাগাছা পৌরসভার আয়তন ১১.৯৯বর্গ কিলোমিটার, ওয়ার্ড সংখ্যা-০৯, জনসংখ্যা সর্বমোট-৫০৬২১ জন।মহিলা- ২৪৯৯১ পুর্বষ – ২৫৬৩০ জন।
বর্তমান সময়ে মুক্তাগাছা পৌরসভার উলেৱখ যোগ্য পরিবর্তন হলো ‘‘ক”শ্রেনীতে উন্নয়ন।গণপ্রজাতন্ত্রীবাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার, পলৱী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয়সরকার বিভাগ, পৌর-২ শাখার ২৬.০৫.২০১১খ্রিঃ তারিখের ৪৬.০৬৪. ০২৮.১০. ০৮. ২৮১. ২০১১/৭৮৫ নং স্মারক মূলে মুক্তাগাছা পৌরসভাকে “খ”শ্রেণী হতে “ক”শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়েছে।যাহা গত ৫জুন’২০১১ খ্রিঃ তারিখে বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত হয়।
ইতিহাসেরসুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আজকের পৌরসভার আয়তন, জনসংখ্যা বহুগুনে বৃদ্ধি পেলেওচাহিদার তুলনায় অপ্রতুল সরকারী সহায়তার কারণে উন্নয়ন হয়নি কাঙ্খিত মাত্রায়।